নিশা একটা স্বপ্নের শহরে বাস করত। প্রতিদিন সকালে সূর্যের আলো যখন তার জানালার দিকে পড়ত, তখন সে মনে করত যেন সারা বিশ্ব তার জন্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু একদিন, সেই শহরে এক অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটে গেল—তার জীবনে এসে পড়ল প্রিয় নামক এক নতুন মুখ।
পরিচয়ঃ
নিশা এবং প্রিয়, দুজনেই এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। নিশার প্রিয় বিষয় ছিল সাহিত্য, আর প্রিয় ছিল গণনা। নিশা যেমন তার কাব্যিক জগতে ডুবে থাকত, প্রিয় ঠিক তেমনই গণনার সুনিপুণ দক্ষতা নিয়ে মগ্ন থাকত। তাদের মাঝে এক অবিশ্বাস্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। প্রথমবার তারা একে অপরকে দেখেছিল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সেমিনারে। নিশা তখন একটা কবিতার কাব্যগ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করছিল, আর প্রিয় গণনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
প্রথম মোলাকাতঃ
সেমিনার চলাকালীন, প্রিয় তার পেপারের কাজ সেরে নিল। সে সুযোগে নিশা তার কবিতার প্রসঙ্গে আলাপ করতে শুরু করে। প্রথম আলাপেই প্রিয় নিশার সাহিত্যিক অনুভূতির গভীরতা বুঝতে পারে। "আপনি এত সুন্দরভাবে কবিতা বর্ণনা করেন। এটা সত্যিই অনন্য," প্রিয় বলেছিল। নিশা হেসে বলেছিল, "ধন্যবাদ! আপনি গণনায় এত ভালো, তা আমি জানি না।"
এই ছোট্ট কথোপকথন থেকেই তাদের বন্ধুত্বের শুরু। তারা একে অপরের শখ এবং চিন্তাভাবনা সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। প্রিয় আর নিশা পরস্পরের পরিপূরক হয়ে ওঠে, একদিকে সাহিত্যিক সৃজনশীলতা আর অন্যদিকে গণনার সুনিপুণতা।
প্রেমের শুরুঃ
দিন যেতে থাকে, তাদের সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। একদিন নিশা যখন প্রিয়কে তার নতুন কবিতার পাণ্ডুলিপি পড়তে দেয়, প্রিয় সেই কবিতা পড়ে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়। সে বুঝতে পারে, এই কবিতা লেখার মাঝে নিশার হৃদয়ের গভীর অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে। প্রিয় নিশাকে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে শুরু করে—যেমন এক অমুল্য রত্ন।
আরও পড়ুন ঃ মামাতো ভাইয়ের সাথে প্রেম
একদিন প্রিয় হঠাৎ করেই নিশার সামনে এসে পড়ে। নিশা তখন তার প্রিয় কবিতার অংশ নিয়ে মগ্ন ছিল। প্রিয় শান্ত স্বরে বলল, "আমি তোমার কবিতা নিয়ে কিছু বলতে চাই।" নিশা তাকিয়ে দেখে প্রিয়ের চোখে একটা বিশেষ চাহনি। প্রিয় আরও বলল, "আমার মনে হচ্ছে, তুমি শুধু কবিতা লেখ না, তুমি হৃদয়ের অনুভূতি প্রকাশ করো। আমি তোমার কাজের গভীরতা বুঝতে পারি।"
নিশা তার কবিতার অনুভূতির ব্যাপারে এত গভীর মন্তব্য শুনে বিস্মিত হয়ে পড়েছিল। "আমি খুব খুশি যে তুমি আমার কবিতার অনুভূতি বুঝতে পেরেছো," সে বলেছিল।
এই মুহূর্তে তাদের মধ্যে একটা বিশেষ সম্পর্কের সূচনা হয়। তারা একে অপরকে অনুভব করে, তাদের হৃদয় একে অপরকে ধারণ করতে থাকে। প্রেমের শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করতে পারে না।
প্রেমের প্রস্তাবঃ
মাস কয়েক পরে, প্রিয় সিদ্ধান্ত নেয় যে সে নিশাকে তার অনুভূতির কথা জানাবে। সে একটি ছোট্ট পরিকল্পনা করে—একটা সুন্দর সন্ধ্যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মঞ্চে। প্রিয় একটি বিশেষ প্রস্তাবনা দেয়—একটি তারিখের রাতে তারা একসঙ্গে বেড়াতে যাবে, যেখানে তারা একসঙ্গে সূর্যাস্ত দেখবে।
সূর্যাস্তের সময়, প্রিয় বলল, "নিশা, আমি তোমার সাথে থাকতে চাই। তোমার কবিতার মধ্যে আমি তোমার হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। আমি তোমাকে ভালবাসি।"
নিশা তার চোখের জল মুছে ফেলল। "আমি তো তোমাকে আগে থেকেই ভালবাসি। আমি তোমার সাথে সময় কাটাতে, তোমার সঙ্গে জীবন কাটাতে চাই।"
চ্যালেঞ্জ এবং জয়ঃ
তাদের প্রেমের সম্পর্ক কেবল সুখেরই ছিল না, কিছু চ্যালেঞ্জও ছিল। নিশার পরিবার প্রিয়কে প্রথমে মেনে নেয়নি, কারণ তার গণনা বিষয়টি তাদের একদম পছন্দ হয়নি। কিন্তু প্রিয় তার নিজস্ব পরিশ্রম এবং ভালবাসা দিয়ে তাদের মন জয় করতে সক্ষম হয়।
এক বছর পর, নিশার পরিবার অবশেষে প্রিয়কে গ্রহণ করে এবং তাদের সম্পর্ককে সম্মান দেয়। নিশা এবং প্রিয় নিজেদের ভালোবাসার শক্তিতে জয়ী হয় এবং একসঙ্গে একটি নতুন জীবনের সূচনা করে।
শেষ কথাঃ
নিশা এবং প্রিয়ের প্রেমের গল্প একটি সুন্দর উদাহরণ যে, সত্যিকারের ভালবাসা সব বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম। তাদের সম্পর্কের প্রতিটি অধ্যায় তাদের জীবনকে নতুন করে রাঙিয়ে দেয়। তাদের ভালোবাসা সাহিত্যিক গভীরতা এবং গণনার সুক্ষ্মতার মিশ্রণ—যেখানে তারা একে অপরের জীবনকে পূর্ণতা দেয়।
এই প্রেমের গল্প প্রমাণ করে যে, প্রেম আসলেই সবকিছুর ওপরে দাঁড়িয়ে থাকে এবং সঠিক ব্যক্তি যখন জীবনে আসে, তখন সব কিছুই সহজ হয়ে যায়।
Post a Comment