বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন গল্পঃ পড়তে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন , ধন্যবাদ ।

বেস্ট ফ্রেন্ড এর বোন যখন গার্লফ্রেন্ড (পার্ট 2) - ভালোবাসার গল্পঃ

গল্পঃ - বেস্ট ফ্রেন্ড এর বোন যখন গার্লফ্রেন্ড
 পার্ট - 2 ( part 1 link )



সত্যি শহরের সাথে গ্রামের কখনো তুলনা হয়না। ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ জান্নাতের একটা এসএমএস আমার ফোনে আসলো....

–বাহিরে ঘুরছ ঠিক আছে কিন্তু এলাকার অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালে কিন্তু চোখ তুলে ফেলবো।

ও আল্লাহ! জান্নাত আমার প্রতিটা খবর কি হবে জানছে? জান্নাত এখন কোথায় আছে আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা। আর আমার খবর গুলো কিভাবে পাচ্ছে আমার তো মাথায় আসছেনা।

–আচ্ছা তুমি কোথায় আছো বলো তো?
–ঠিক সময় আসুক সবকিছু জানতে পারবে।
–তোমার জন্য এত কষ্ট করে আমি আসলাম আর আমার সাথে দেখাই করছো না।
–কিচ্ছু করার নাই অপেক্ষা করো। সবুরে মেওয়া ফলে হি. হি. হি....


কি আর করার কোন উপায় নেই জান্নাত কে দেখার। গ্রামটা ঘুরে দেখা শেষে বাসায় ফিরি। বাসায় ফিরে রুমে রেস্ট নিচ্ছি। এমন সময় দেখলাম মিম বারবার আমার রুমের সামনে দিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি বুঝলাম না ব্যাপারটা কি মেয়েটা আমার রুমের সামনে দিয়ে এমন ঘোরাঘুরি করছে কেন। একটুপর ডিনারের জন্য ইব্রাহিম এসে ডেকে গেল। তারপর ডিনার শেষে রুমে এসে শুয়ে আছি। একটু পর আমার ফোনে মেসেজ আসলো...

–কি ব্যাপার সারাদিন রুমের মধ্যে শুয়ে বসে থাকো খারাপ লাগছে না?
–তুমি কোথায় আছ এখন? আর তুমি কিভাবে বুঝলে আমি রুমের মধ্যে বসে আছি?
–তোমাকে বলছিনা তোমার প্রত্যেকটা কদম এখন থেকে আমি দেখতে পাবো।
–তাহলে আমার সামনে আসছ না কেন?
–সঠিক সময় আসুক ঠিকই সামনে যাব। আচ্ছা তোমাকে যেটা বলার জন্য মেসেজ দিছি চলো কাল দেখা করি...
–সত্যি কাল দেখা করবা?
–হ্যাঁ দেখা করব। কাল স্কুলের মাঠে চলে এসো দেখা হবে..
–কিন্তু আমি তো স্কুলের মাঠ টা চিনিনা কিভাবে যাব?
–তুমি বাসা থেকে বেরিয়ে ডানদিকে একটা রাস্তা আছে রাস্তা দিয়ে সোজা চলে আসবে তারপর সামনে একটা মোড় দেখতে পাবে সেখান থেকে উত্তর দিকে একটু সামনে গেলেই স্কুলের মাঠ পড়বে আর সেখানে আমরা দেখা করব।
–আচ্ছা ঠিক আছে জান।

সত্যিই আজ আমি অনেক খুশি কাল জান্নাতের সাথে দেখা হবে এটা ভাবতেই আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছি। কাল প্রথম জান্নাতের সাথে আমার দেখা হবে। আমি খুবই এক্সাইটেড হয়ে আছি। জান্নাতের কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়ি বুঝতে পারছি না।

পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে স্কুলের মাঠে চলে যায়। কিন্তু কোথাও জান্নাত কে দেখতে পারছিনা। হঠাৎ সামনে থেকে চার-পাঁচটা মেয়ে আসলো..

–কি ব্যাপার এখানে দাঁড়িয়ে কি করেন?

দেখলাম মেয়ে গুলোর মধ্যে মিম মেয়েটির আছে। কি বলব বুঝতে পারছিলাম না।

–কি হলো কিছু বলেন না কেন?
–কি বলবো! একজনের সাথে দেখা করার জন্য আসছে কিন্তু তাকে খুঁজে পাচ্ছিনা..
–কার সাথে দেখা করতে আসছেন ভাইয়া? (মীম বলল)
–জান্নাতের সাথে দেখা করতে আসছি।
–ও তাহলে আপনি সেই হৃদয়!
–হ্যাঁ কিন্তু আপনারা কারা?
–আমরা জান্নাতের ফ্রেন্ড।
–ও আচ্ছা। কিন্তু আপনাদের ফ্রেন্ড কোথায়?
–জান্নাত তো আসেনি।
–কেন? জান্নাতের তো আজকে আমার সাথে দেখা করার কথা ছিল।
–সরি আজ জান্নাত আপনার সাথে দেখা করবে না।
–আপনি কি ভেবেছেন জান্নাতের দেখা পাওয়া খুব সহজ?
–সহজ হবে না কেন আমি তো তাকে ভালোবাসি..
–ভালবাসেন তাতে কি দেখা হচ্ছে না। আচ্ছা শুনেন এখানে যখন এসেই পড়েছেন তাহলে আজকে আপনি আমাদের খাওয়াবেন।
–আমি আপনাদের কেন খাওয়াবো?
–বা রে দেখতে হবে না আপনি কিপটা নাকি?
–আমি কিপটা নই।
–সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি। যদি কিপটা না হতেন তাহলে আমরা জান্নাতের ফ্রেন্ড জানার পর আমাদের খাওয়াতে না করতেন না।
–আমি কিভাবে বুঝব সত্যিই আপনার জান্নাতের ফ্রেন্ড!
–আপনি কি আমাদের চিটার ভাবছেন?
–হইতেও পারে নি কিভাবে বলবো!
–আচ্ছা ঠিক আছে আমরা চিটার। জান্নাতের সাথে দেখা হওয়ার কথা ভুলে যান।
–কেন জান্নাতের সাথে দেখা হওয়ার কথা ভুলে যাব কেন?
–জান্নাতের আপনার সাথে দেখা করবে না। আপনি আমাদের চিটার বললেন।
–আচ্ছা আমার ভুল হয়েছে সরি প্লিজ জান্নাতের সাথে দেখা হওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।
–আপনি তো আমাদের খাওয়াতেই চাইলেন না তাহলে দেখা করানোর কথা ভাববো কিভাবে?

হঠাৎ এমন সময় ফোনে মেসেজ আসলো..

–ও চুপচাপ আমার ফ্রেন্ডরা যা বলে তাই শোনো। ওরা যা খেতে চাই তাই খাওয়াবেন না হলে কিন্তু তোমার সাথে দেখা করব না।
–কিন্তু তুমি কোথায় আছো? আর আজ তো আমার সাথে দেখা করার কথা ছিল।
–দেখা করার কথা ভুলে যাও।যদি আমার ফ্রেন্ডরা খুশি হয় তোমার প্রতি তাহলে আমি দেখা করবো।

কি আর বলব বলির পাঠা। জান্নাতের সব ফ্রেন্ডকে বললাম..

–চলেন আপনাদের খাওয়াতে নিয়ে যায়।
–কিন্তু আমরা তো চিটার তাহলে আমাদের খাওয়াবেন কেন?
–প্লিজ বোন মাফ চাই। প্লিজ চলেন...

তারপর সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাই এবং সবাইকে ইচ্ছামত খাওয়াই। একবারে বিল এসেছে 1850 টাকা। পকেট অর্ধেক ফাঁকা করে ফেলল শুধু একবারেই। আল্লাই জানে আমার পকেট থেকে আর কত খসবে। হোটেলের বিল দেবো শেষে জান্নাতের ফ্রেন্ডদের বললাম...

–এখন তো জানতে সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করে দেবেন প্লিজ?
–আচ্ছা ভেবে দেখি।যদি মনে হয় আপনার সাথে জান্নাতের দেখা করানো যাবে তাহলে দেখা করাবো।
–এটা কেমন কথা?
–হ্যাঁ এইটাই কথা। আর হ্যাঁ আমার ভাইয়া যেন আজকের ব্যাপারে কোন কিছু না জানে। (মীম বলল)
–আচ্ছা ঠিক আছে।

একে তো পকেট থেকে এতগুলো টাকা খসালো আবার জান্নাতের সাথে দেখা করার ব্যবস্থাও করে দিলো না। কেমনডা লাগে আপনারাই বলেন তো?

দুঃখ ভরা মন নিয়ে বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে ছাদে যাই। ছাদে গিয়ে বসে আছি। কিছু ভালো লাগছে না বারে বারে জান্নাতের কথা মনে পড়ছে। জান্নাতের সাথে খুব দেখা করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছিনা। এমনসময় মিম ছাদে চলে আসেন আর আমাকে বলে...

–কি ব্যাপার দুলাভাই ছাদে একা একা কি করেন?
–তুমি আমার সব খবর জান্নাত কে বল তাই না?
–সেটা জেনে আপনি কি করবেন?
–জানে তুমি জান্নাত কে আমার সকল খবর বল। তুমি ছাড়া তুমি বাসায় আর কেউ নেই।
–হ্যাঁ আমি বলি তো কি হইছে?
–মিম প্লিজ জান্নাতের সাথে একবার দেখা করার ব্যবস্থা করে দাও না।
–সরি আমি পারবো না।

এটা বলে মীম আমাকে ভেংচি কেটে নিচে চলে যায়। কি বলব কারো ভাবসাব কিছু বুঝিনা। সবাই আমার সাথে প্রতারণা শুরু করে দিয়েছে। কার জন্য এই সিরাজগঞ্জে আসলাম তার সাথে আমার দেখা হচ্ছে না।

বিয়ের এখনো তিন দিন বাকি। আর তাই সবাই প্ল্যান করে যমুনা নদীতে ঘুরতে যাবে। ইব্রাহিম দের বাড়ি থেকে যমুনা নদী বেশি দূর না তাই প্ল্যান অনুযায়ী পরের দিন সকালে যমুনা নদীতে ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়ি। যমুনা নদীর বাড়ি গিয়ে সবাই অনেক আনন্দ করছি। নদীতে প্রচুর স্রোত বইছে। নদীর আরে কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর সবাই মিলে প্ল্যান করি নৌকা চলে নদীর ভিতর করব। কথামতো একটা নৌকায় উঠে পড়ি। আজ জীবনে প্রথম নৌকায় উঠছি খুব ভয় করছে যদি নৌকা থেকে পড়ে যায় বা নৌকাটা ডুবে যায়। কিন্তু সবাই নৌকায় অনেক মজা নিচ্ছে। সবাই নৌকার উপর নাচানাচি করছে। আমি সাঁতার জানিনা তাই আমার ভয়টা অনেক বেশি ছিল। ইব্রাহিমও সাঁতার জানত না কারণ ও ছোট থেকেই ঢাকায় বড় হয়েছে। ইব্রাহিম আর আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম। সবাই নাচানাচি করছে খুব মজা করছে তারা। তাদের দেখে খুব হিংসা হচ্ছিল। উফ আমিও যদি ওদের সাথে একটু নাচতে পারতাম। কিন্তু আমার তো ভয় করছে যদি নৌকাটা ডুবে যায়। সবকিছু ভুলে ভাবলাম যা হবার হবে সবার সাথে আমিও নাচবো। সবার সাথে নাচতেছি হঠাৎ এমন সময় একজনের সাথে ধাক্কা লেগে আমি নৌকার উপর থেকে নদীর ভেতর পড়ে যায়......


সবার সাথে নাচতেছি হঠাৎ এমন সময় একজনের সাথে ধাক্কা লেগে আমি নৌকার উপর থেকে নদীর ভেতর পড়ে যায়। আমি সাঁতার জানি না পানির মধ্যে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছি কিন্তু স্রোতে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না।পানির স্রোতের মধ্যে আমি হারিয়ে যেতে লাগলাম এমন সময় মিম নদীতে লাফ দিয়ে আমাকে খুঁজতে লাগে কিন্তু কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছিল না। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে আমার দেহটা খুঁজে পায় তারপর আমার দেহটি নৌকার উপরে উঠাই। আমার দেহ নৌকার উপর উঠিয়ে তাড়াতাড়ি করে নদীর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নদীর পাড়ে নিয়ে আমার পেটে চাপ দিয়ে পেট থেকে পানি বের করা হয়। পানি বের করার পরও আমার জ্ঞান ফেরে না। কি করবে কেউ বুঝতে পারছে না। এমন সময় মিম আমার মুখটা একটু ফাঁকা করে মীমের মুখ আমার মুখে বসিয়া ফু দিতে শুরু করে। সবাই চেয়ে চেয়ে মিমের কান্ড দেখে হা করে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ ফু দেওয়ার পরে আমি লাফ দিয়ে উঠি। তারপর আমাকে নিয়ে হাসপাতাল যাওয়া হয়। ডাক্তার আমার চিকিৎসা করে আর বলে...

–রোগীর ঠিকমত যত্ন নিতে হবে না হলে ভবিষ্যতে কোন বড় সমস্যা হতে পারে।
–ঠিক আছে ডাক্তার আমরা ওর ঠিকভাবে যত্ন নেব।

তারপর আমাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। বাসায় নিয়ে আসার পর আমার যত্ন নেওয়া হবে খুব ভালোভাবে। বিশেষ করে মিম আমার খুব যত্ন নেই। জান্নাত আমার কাছে ফোন করে খুব কান্না করত আমার এমন অবস্থা দেখে। আমি পাগলিটাকে সান্তনা দেওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারতাম না। মিম আমার কাছে এসে বারে বারে মাফ চাইতো আর বলতো..

–সত্যি আমি জানতাম না আপনি সাঁতার জানেন না। আমিতো মজা করে আপনাকে ধাক্কায় দিছিলাম। কিন্তু আপনার এমন অবস্থা হবে আমি বুঝতে পারিনি। আমাকে মাফ করে দিবেন প্লিজ।
–আরে বোকা সমস্যা নাই তুমি তো না বুঝেও করেছো। তুমি যদি জানতা আমি সাঁতার জানিনা তাহলে তো আর করতে না। এসব চিন্তা বাদ দাও। আজ তোমার জন্য আমি বেঁচে আছি। তুমি আমায় আবার দ্বিতীয়বারের মতো জীবন দান করুন। তোমার কাছে আমি ঋণী।
–আমার জন্য এত কিছু হলো আর আপনি... সত্যিই আপনি অনেক বড় মনের একজন মানুষ।
–আর তোমার জন্যই তো আমি নতুন জীবন পেয়েছি। তোমাকে ভুল বুঝব কিসের জন্য?
–এখন থেকে আমি আপনার বেশি করে যত্ন নেব।
–থাক বোন এত বেশি যত্ন নিতে হবে না। তোমার ফ্রেন্ড জানতে পারলে আবার আমার উপর রাগ করবে।
–জান্নাত আপনাকে কিছু বলবেনা।
–কেন কিছু বলবে না কেন?
–কারণ আমি সবার মত না। জান্নাত আমাকে খুব ভালো ভাবেই চেনে।
–তোমাদের ফ্রেন্ডশিপ তোমরাই ভালো বোঝো।কিন্তু আমার উপর রাগ করলে কিন্তু আমি দায়ী নই। তোমাকে রাগ ভাঙ্গিয়ে দিতে হবে।
–আচ্ছা ঠিক আছে আমি রাগ ভাঙ্গিয়ে দেবো এখন হ্যাপি?
–হুম। আচ্ছা এখন একটু রেস্ট নেন আপনার সাথে পরে কথা বলি।

এরপর থেকে মেয়েটি আমার খুব যত্ন নেওয়া শুরু করে। আজ ইব্রাহিমের চাচার গায়ে হলুদ। আমিও প্রায় সুস্থ হয়ে গেছি শুধুমাত্র মিমের যত্ন নেওয়ার জন্য। গায়ে হলুদের অর্ধেক দায়িত্ব আমার ও ইব্রাহিম এর উপর। আমাকে আর ইব্রাহিমকে বিয়ের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।গায়ে হলুদের প্যান্ডেল সাজানো বাড়িতে সুন্দরভাবে ডেকোরেশন করা লোকজনের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা সবকিছুই ছিল আমার ও ইব্রাহিমের উপর দায়িত্ব। গায়ে হলুদের জন্য প্যান্ডেল সাজাচ্ছি আর বাড়িতে ডেকোরেশন দিয়ে সাজাচ্ছি। বিকেল বেলা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে মেয়ে পক্ষরা চলে আসে। হলুদ মাখাতে অনেক মেয়ে আছে তারমধ্যে একটি মেয়ে দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। আমাকে দেখে বারবার আসে পাশে ঘুরতে লাগে। এমন টা দেখে মিম খুব ক্ষিপ্ত হত। আমি কিছুতেই বুঝতাম না মিম আমার উপর ক্ষেপ্ত কেন। মীম আমাকে বারেবারে বলতো....

–আজ গায়ে হলুদ অনেক মেয়ে আসছে যদি কোন মেয়ের সাথে উল্টাপাল্টা কিছু করতে চান তাহলে কিন্তু আপনার খবর আছে।
–তোমার ফ্রেন্ড তো আমার সামনে আসে না তাহলে আমি যদি অন্য কারো সাথে কিছু করি অসুবিধা কি?
–কি বললেন? আপনার সাহস তো কম না...অন্য কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকালে আপনার চোখ দুটো উঠে মার্বেল খেলবো।
–আচ্ছা আমি যদি অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাই তাহলে তোমার কি?
–ইয়ে........এ... এ... একদম বেশি বেশি করার চেষ্টা করবেন না আমি কিন্তু জান্নাত কে সবকিছু বলে দেবো।
–শুধু একবার বলে দেখো তোমার অবস্থা খারাপ করে দেবো।
–কি করবেন শুনি?
–আমি কি করবো আমি নিজেও জানিনা। প্লিজ বোন জান্নাত কে কিছু বলো না।
–আমিতো জান্নাত কে বলে দেবো দেখি আপনি কি করেন।
–প্লিজ বল আমি তোমার কাছে হাত জোড় করছি প্লিজ জান্নাত কে কিছু বলবেনা।
–আচ্ছা ঠিক আছে।

দেখতে দেখতে গায়ে হলুদ শেষ হল। রাত্রে জানাতে সাথে ফোনে কথা বলছি....

–তুমি গায়ে হলুদের সময় মেয়েদের দিকে তাকিয়ে ছিলে কেন?
–কোন মেয়ের দিকে তাকাইলাম আর তোমাকে কে বলল এটা?
–যে বলার সে বলছে তুমি বলো অন্য মেয়েদের দিকে কেন তাকাইছো?
–সত্যি আমি তাকাইনি। ওই মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।
–না তুমি ওই মেয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলে আমি জানি। সব ছেলে এক রকম।
–ওই জান্নাত সত্যিই আমি অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাই নি। আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি। তোমাকে ছাড়া অন্য কোন মেয়ের কথা ভাবতেও পারিনা..
–তুমি সব মিথ্যা কথা বলছো।আমি জানি সব কিছু আর তাই আজকের পর থেকে তুমি আর আমার সাথে কোন কথা বলবেনা।

কথা বলতে বলতে ভালো লাগছিলো না তাই ছাদে যাওয়ার জন্য রুম থেকে বেরিয়ে হাঁটতে থাকি। সিঁড়ির সামনে মিমের রুম। ফোন কথা বলতে বলতে চলে যাচ্ছি এমন সময় খেয়াল করলাম। আমার ফোনে যে ভয়েস যা আসছে তা মিমের রুম থেকেও আসছে। আমি বুঝতে পারছিলাম না। তারপর সবকিছু ভালভাবে দেখে বুঝলাম যে মিম ই আমার সেই জান্নাত।

–আমার কথা বুঝতে পারছ? আজকের পর তুমি আমাকে একদম ফোন দিবা না.. আজ থেকে তোমার সাথে আমার ব্রেকআপ।
–আচ্ছা ঠিক আছে আমার সাথে কথা বলতে হবেনা। আমিও তোমার সাথে কথা বলবো না। যাও তুমি তোমার মতো থাকো।

এটা বলে ফোনটা রেখে দেই। তারপর আমি আমার রুমে চলে যাই। একটু পর মেয়েরা আমার রুমে দৌড়ে আসে আমাকে বলতে লাগলো..

–ওই আপনি আমার ফ্রেন্ড কে কি বলছেন হ্যাঁ? জান্নাত কান্না করছে কেন?
–ওর সাথে কথা বলব না তাই।
–এই আপনার ভালোবাসা? ছিঃ যার জন্যে আপনি ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ আসলেন তার সাথে কথা বলা বন্ধ করছেন? আপনার কখনো ভালো হবে না..

মিম এইসব কথা বলে যাচ্ছিল এমন সময় আমি মিমকে জড়িয়ে ধরি..

–এই কি করছেন আপনি? আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন কেন?
–তাইতো আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরেছি কেন।আচ্ছা এক মিনিট দাড়াও আমি জান্নাত কে ফোন করে একটু বলে নেই যে আমি তোমাকে কেন জড়িয়ে ধরেছি..
–এ...এ...এটা..... জান্নাত কে বলার কি আছে?
–তুমি এমন তোতলাচ্ছে কেন?
–কই তোতলাচ্ছি? তোতলাচ্ছিস না তো... এমনেই...
–আচ্ছা তাহলে আমি জান্নাত কি একটা ফোন দেই?
–জান্নাত কে কেন ফোন দিবেন?
–কারণ তুমি আমার জান্নাত তাই..
–আমি আপনার জান্নাত হতে যাব কেন?
–ও আচ্ছা তাই না?
–হ্যাঁ তাইতো.. আমিতো মিম আপনার ফ্রেন্ডের ছোট বোন..
–আচ্ছা এখনি প্রমান হয়ে যাবে এক মিনিট আমি জানাতে একটা ফোন দেই..

এটা বলে জান্নাতের নাম্বারে ফোন দিলাম আর মিমের ফোনটা বেজে উঠলো..

–আপনার মোবাইল বাড়ছে কেন মোবাইলটা একটু দেখি। কে ফোন করেছে আপনাকে দেখি?
–না... মা......মানে.... কেউ ফোন করেনি আপনাকে দেখতে হবে না..
–আমি তো দেখেই ছাড়বো.. মোবাইলটা দাও বলছি।
–না আমি কিছুতেই মোবাইল দেবো না। এটা আমার পার্সোনাল ফোন আপনাকে কেন দিব?
–আমি কিছু জানিনা আমি নেব..

মিমের সাথে জোরাজুরি করতে করতে আমি বিছানা উপর পড়ে যায় আর মিম আমার বুকের উপর পড়ে যায়। দুজন দুজনের খুব কাছে চলে এসেছি। দুজনে দুজনার নিঃশ্বাস অনুভব করতে পারছি।

–আমার কাছে কেন তুমি পরিচয় গোপন করবে?
–তোমাকে পরীক্ষা করতে চেয়েছিলাম..
–তো তোমার পরীক্ষা কি শেষ হয়নি?
–হুম হইছে..
–তাহলে এখন স্বীকার করলে তো তুমি আমার জান্নাত!
–এখন আর না স্বীকার করে উপায় আছে?
–তাহলে এখন ছোট্ট করে একটা মিষ্টি দাও!
–কেন মিষ্টি দেবো কেন?
–বা রে আমার সাথে এতদিন অভিনয় করলে আমাকে এত কষ্ট দিলেন তার বিনিময় এখন আমাকে মিষ্টি দেবে না?
–না দেবো না..

এটা বলে মেয়ে আমার বুকের উপর থেকে উঠে যেতে চাইলো আমি ওর হাত ধরে টান দিয়ে আবার মা বুকের মধ্যে টেনে নিলাম। আর তারপর মেয়েদের ঠোঁটে আমার ঠোঁট লাগিয়ে ভালবাসার প্রথম ছোঁয়া একে দিলাম। এভাবে তিন মিনিট থাকার পর মীম আমাকে ছাড়িয়ে দৌড়ে তার রুমে পালিয়ে যায়... পাগলিটা আজ অনেক শরম পাইছে। পাবারি কথা ভাবতেও পারেনি আজকে আমি ওর সাথে এমন টা করব। পাগলিটা রুমে গিয়ে ঘাপটি মেরে শুয়ে আছে। আমি মিমের রুমে গিয়ে মিমের কাঁধে হাত রাখলাম। আমার হাত রাখা দেখে মিম বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পরল......


Nexr par : part 3 link


ধন্যবাদ! আমি আনন্দিত যে আপনি গল্পটি পছন্দ করেছেন। আমি চেষ্টা করব যেন আপনার জন্য আরও ভাল গল্প লিখতে পারি। আপনি কি কোনও বিশেষ ধরনের গল্প চান? যেমন—রোমান্স, অ্যাডভেঞ্চার, মিস্ট্রি, বা অন্য কিছু? আমাকে জানান, আমি আপনার জন্য একটি নতুন গল্প লিখতে প্রস্তুত!

Post a Comment

Previous Post Next Post